===

Moroner Pore | Full Drama | Tawsif Mahbub | Keya Payel | M M Kamal Raz | Anik | Cinemawala

 
#গল্প_মিস্ট্রি
#পর্ব_১৬
#লেখক_মো_আল_আমিন(শান্ত)
[কপি করা নিষিদ্ধ]
"নাম্বারটা পাশের গ্রামের অজয় নামে একজন লোকের"
আলিসা আমার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো।
আমি বললাম,
"পাশের গ্রামের অজয়ের?"
"হ্যাঁ, এটাই জানা গিয়েছে"
"তাহলে তো তাকে এবার ধরতে হয়"
"হ্যাঁ সেটা তো অবশ্যই, আর তার জন্য এতক্ষণে পুলিশ চলেও গিয়েছে তাকে ধরতে"
আমি কিছু বললাম না চুপ করেই রইলাম।
আলিসা এবার বললো,
"চলুন থানাতে যাওয়া যাক এবার"
"ঠিক আছে সেটাই ভালো হবে"
★★★
 
থানাতে পৌছতেই একজন পুলিশ সদস্য আলিসার কাছে এলো।
আলিসা তাকে বললো,
"অজয়কে ধরা গিয়েছে?"
"জ্বি ম্যাডাম সে ভেতরেই আছে"
এরপরে আমি আর আলিসা ভেতরে এলাম।
দেখি একজন মাঝ বয়সি লোক চেয়ারে বসে আছে।
আলিসা উনার সামনে গিয়ে বসতেই লোকটা বললো,
"ম্যাডাম আমারে ক্যন ধইরা আনছেন? কী করছি আমি?"
"হয়তো খুন"
 
লোকটি আলিসার কথা শুনে এবার সম্পূর্ণ চঁমকে ওঠে বললো,
"কী কইতাছেন ম্যাডাম এইসব? খু...খুন? আমি কাউরে ক্যন খুন করতে যামু? আমি গরিব মানুষ ম্যাডাম, আমারে ছাইড়া দ্যন"
আলিসা এবার ফোন নম্বরটি তার সামনে দিয়ে বললো,
"এটা আপনারই নম্বর তো?"
 
লোকটি এবার নম্বরটি ভালো করে দেখে বললো,
"হ্যাঁ ম্যাডাম এইডা তো আমারই নাম্বার"
"এই নাম্বার থেকে গতকাল একটা হুমকির মেসেজ এসেছে ইনার ফোনে"
আলিসা আমার দিকে ইঁশারা করে দেখিয়ে বললো।
লোকটি বললো,
 
"ম্যাডাম আমি পড়ালেখা জানি না, আমি কীভাবে কাউরে ম্যাসেজ করমু? আমি তো বাংলা পড়তেও পারি না"
 
"তাহলে আপনার ফোন থেকে কে মেসেজ করেছিলো?"
"সেইডা তো আমি জানি না ম্যাডাম"
"আপনার ফোন থেকে কেউ মেসেজ করছে আর আপনি বলছেন জানেন না এটা কেমন কথা?"
"ম্যাডাম সারা দিন দোকানে তো কত মানুষই আসা যাওয়া করে, তাদের মধ্যেই কেউ হয় তো ফোনটা নিয়া দিছে"
এবার আমি বললাম,
 
"কালকে কি এমন কেউ এসেছিলো আপনার দোকানে যে অনেকক্ষণ যাবৎ ছিলো"
অজয় এবার একটুক্ষণ ভেবে বললো,
 
"হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়ছে একজন লোক অনেকক্ষণ ধরে আমার দোকানে বসে ছিলো। তখন আমিই তারে কইছিলাম দাদা আমি একটু ভেতরে যাইতাছি আপনি দোকানডা একটু দেইখেন"
"কে ছিলো সেই লোকটা?"
"আমি তো তারে চিনি না"
"তার চেহারাটা মনে আছে তো?"
"কিছু টা"
 
"ঠিক আছে আপনি স্কেচ আর্টিসকে সেই লোকের চেহারাটা বলবেন"
অজয় হ্যাঁসূচক মাথা নাড়লো।
আলিসা পেঁছনের পুলিশ সদস্যটিকে বললো,
"চেয়ারম্যানের ছেলের উপরে নজর রাখা হচ্ছে তো?"
"হ্যাঁ ম্যাডাম আপনি যেমনটা বলেছেন তেমনটাই করা হচ্ছে, কিন্ত এখন পর্যন্ত তো সবকিছুই স্বাভাবিকই জানা গেছে"
 
"ঠিক আছে তারপরও নজর রাখতে থাকুন"
কথা বলে আমি আর আলিসা বাহিরে চলে এলাম। আলিসা আমাকে বললো,
"খুনির হয়তো এটা একটা চাল ছিলো আমাদেরকে বিভ্রান্ত করবার"
"হ্যাঁ আমারও সেটাই মনে হয়। খুনি চাচ্ছে কেসটা যাতে আর সামনে না এগোয়"
আলিসাও হ্যাঁসূচক মাথা নাড়লো।
 
গাড়িতে উঠতে যাবো ঠিক এমন সময়ই আদনান উপস্থিত হলো এখানে।
তারপরে আলিসাকে সরাসরি বললো,
"আলিসা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে"
"তোমার সাথে আমি পরে কথা বলবো এখন একটু ব্যস্ত আছি"
"হ্যাঁ সে তো দেখতেই পাচ্ছি কতটা ব্যস্ত"
আমার দিকে একবার তাকিয়ে আলিসাকে বললো কথাটা।
আলিসা বললো,
 
"মানেটা কী? তোমার কথার মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না আমি"
"তোমার অত কিছু না বুঝলেও চলবে। তুমি এখন আমার সঙ্গে যাবে"
"মোটেও না। তুমি এখন আসতে পারো"
"আলিসা তুমি কেন আমার সাথে এমন করছো?"
"আমি কিছুই করিনি বরং তুমি নিজেই যা করার করছো"
"আলিসা একবার বুঝবার চেষ্টা করো প্লিজ"
আলিসা আদনানকে আর কিছু না বলেই নিজে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো।
আমিও গিয়ে তার পাশে বসলাম। দেখলাম আনদান রাগে ফুঁসছে।
★★★
 
"উনার সাথে আপনার যাওয়াটা উচিত ছিলো"
"মোটেও না। ও সব সময়তেই একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে যেটা আমার একদমই পছন্দ নয়"
আমি আর কিছু বললাম না।
হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো। স্ক্রীনে তাকিয়ে দেখি অনন্যার নম্বর।
কিন্ত এখন ওর সাথে একদমই কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
তাই আর ফোনটা রিসিভ করলাম না।
 
কিন্ত ও এক নাগারে কয়েকবার কল দিতেই থাকলো।
খানিকক্ষণ বাদে আমার গন্তব্য পৌছে গেলাম। আলিসা আমাকে রেখে চলে গেল।
আমি ফ্রেস হয়ে আমার রুমে গেলাম। তারপরে বিছানাতে গা এলিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়লাম।
আর শুতেই মাথায় হাজারো ভাবনা এসে উঁকি দিতে থাকলো।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সে খেয়াল একদমই নেই।
 
ঘুমটা ভাঙলো বেশ অনেক রাতে, দরজাতে কারো কড়া নাড়ার শব্দে।
আমি ফোনের স্ক্রীনে তাকিয়ে দেখি রাত ১টার কাছাকাছি সময়।
কিন্ত এত রাতে আবার কে এলো এখানে?
ধীরে ধীরে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলাম।
কিন্ত দরজা খুলতেই আমি বেশ অবাক হলাম কারণ বাহিরে কেউ নেই।
এদিক ওদিক তাকালাম নাহ কেউ তো নেই।
তবে দরজাতে শব্দ করলো কে?
হয়তো আমারই মনের ভুল ছিলো।
 
তাই ভেবে আবারও রুমে যাবার জন্য ঘুরেছি হঠাৎই মনে হলো সামনের গাছটার আড়ালে কেউ রয়েছে।
আমি ফোনের ফ্ল্যাশটা অন করে সেদিকে ধরে বললাম,
"কে ওখানে?"
কিন্ত আমার প্রশ্নের কোনো প্রতুত্তর এলো না।
আমি এবার ধীরে ধীরে গাছটার কাছে যেতে থাকলাম।
যতই সামনে এগোচ্ছি ততই কোনো এক অজানা ভয় আমাকে যেন ঘিরে ধরছে।
গাছটার একদম কাছে যেতেই বুঝলাম কেউ না কেউ রয়েছেই ওপাশে।
আমি আবারও বললাম,
 
"যেই হও বাহিরে বেরিয়ে এসো"
কিন্ত এবারেও কোনো সাড়া শব্দ এলো না।
কয়েক মুহূর্ত সব কিছু শান্ত থাকলো।
কিন্ত পরক্ষণে হঠাৎই কেউ একজন ছুড়ি হাতে ঝাপিয়ে পড়লো আমার উপরে।
ফোনটা আমার হাত থেকে ছিটকে পড়ে গেল মাটিতে।
লোকটির মুখে কালো মুখোস থাকবার কারণে তার চেহারাটা দেখা যাচ্ছে না।
সে আমাকে মারবার জন্য প্রাণপনে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
বেশ খানিকক্ষণ চেষ্টা সত্ত্বেও যখন সে আমাকে মারতে পারলো না তখন ও আমাকে রেখেই পালিয়ে গেল।
 
আমার হাতটা জখম হয়েছে সেখান থেকে রক্ত ঝরছে।
আমি হাতটা ধরে উঠে ফোনটা হাতে নিতেই দেখি মাটিতে একটা ঘড়ি পড়ে আছে।
নিশ্চয়ই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হামলাকারীর ঘড়িটা কোনোভাবে পড়ে গেছে।
আমি রুমাল দিয়ে ঘড়িটা ধরে রুমে চলে এলাম।
★★★
 
পরদিন আলিসার অফিসে গিয়ে তাকে রাতের সমস্ত ঘটনাটা খুলে বলি।
তারপরে সেই ঘড়িটাও তাকে দেখাই। আলিসা বলে,
"আপনি খুব ভালো একটা কাজ করেছেন এই ঘড়িটাকে নিয়ে এসে। এতে অবশ্যই হামলাকারীর ফ্রিংগারপ্রিন্ট থাকবে"
আমিও হ্যাষূচক মাথা নাড়লাম।
আলিসা ঘড়িটাকে দ্রুত ফরেন্সিক টিমের কাছে পাঠিয়ে দিলো।
★★★
 
আমি আর আলিসা ফরেন্সিক ল্যাবে এসে বসে আছি।
কিছুক্ষণ পরে ভেতর থেকে একজন লোক বেরিয়ে এলো।
আলিসা তাকে বললো,
"ঘড়িটা থেকে কোনো ফ্রিংগারপ্রিন্ট পাওয়া গিয়েছে?"
"হ্যাঁ, দুজনের ফ্রিংগার প্রিন্ট পাওয়া গিয়েছে। সেই দুটো ফ্রিংগার প্রিন্টের মধ্যে একটা ইনার"
আমার দিকে দেখিয়ে বললো।
বুঝলাম সে সময় আমার হাতের ছাপও পড়েছে ঘড়িটাতে। আলিসা আবারও বললো,
"আর একটা?"
 
"সেটা তো এখনো জানা যায়নি"
"ঠিক আছে। প্রথমে আমাদের লিস্টে যতগুলো অপরাধি আছে তাদের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে"
আলিসা ফোন করে কাউকে এটা বের করবার দায়িত্ব দিলো।
খবর আসতে বেশি সময় লাগলো না, জানা গেল এই ছাপটা একজন কন্ট্রাক্ট কিলারের।
যে টাকার বিনিময়ে মানুষকে খুন করে।
.
.
চলবে...........
[ত্রুটি মার্জিত]

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

===

You may also like

===