Bhulona Amay | Full Natok | Musfiq R. Farhan | Keya Payel | Jakaria Showkhin | Eid Natok 2022 #নেশাক্ত_জ্বীনের_ভালবাসা -২ পর্ব-১
মিষ্টি রঙের ষাট কেজি ওজনের একটি লেহেঙ্গা পড়ানো হলো আমায়। অদ্ভুত রকমের গয়নাও পড়ানো হলো। ভাবতেই অবাক হচ্ছি আমার কোন বড়লোকের ঘরে বিয়ে দিচ্ছে বাবা। বরপক্ষের লোকেরা নাকি বৌ সাজানোর জিনিসপত্র দিয়েছে। পুতুলের মত দেখাচ্ছে আমায়। বিয়ে নিয়ে যথেষ্ট খুশি আমি। ছোটবেলা থেকেই বিয়ের স্বপ্ন দেখে আসছি তা পূরণ হচ্ছে আজ। হঠাৎ করেই বাবা বিয়েটা ঠিক করে দিলো। এতদ্রুত বর পেল কোথায় তাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। হঠাৎ দুজন কালো বোরখা পড়া মহিলা এসে আমায় ভারি লেহেঙ্গার ওপর কালো বোরখা পড়িয়ে দিলেন। গরমে মরি মরি অবস্থা। তবুও মানিয়ে নিলাম চুপ করে। এছাড়া কিছুই করার নেই।
[আমি রোজা জাহান । সবে ইন্টার শেষ করলাম। মাদ্রাসায় পড়ি । পরিবারে বাবা, দাদি ছাড়া কেউ নেই। বাবা জ্বীন-ভূত ধরার কাজ করেন। তাকে তান্ত্রিক হিসাবে বলে সবাই। ছোটবেলা থেকেই বাবার রুমে যেতে দেয়নি আমায়। দাদির কাছে বড় হয়েছি। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে শুনি বাবা নাকি বিয়ে ঠিক করেছে আমার। তার কথায় ভয় পেয়েও নিজেকে সামলিয়ে রেখেছি। রাজি না হলে হয়তো বশ করে বিয়ে দিয়ে দিত। বাবার জেদ অনেক তাই রাজি হয়ে গেছি। খুশিও হয়েছি এই জনমানবশূন্য বাড়ি থেকে মুক্তি পাবো বলে ]
আমাকে সাজিয়ে নিচে নিয়ে যেতেই বাবা এলেন।
_মারে আমাকে মাফ করে দিস। আমি ছোট থেকেই তোর কিছু করতে পারিনি । বাবার দায়িত্বটাও পালন করিনি। আজ নিজের করা একটা ভুলের জন্য তোকে চোরা বালিতে ফেলে দিলাম। জানিনা কি হবে তোর ।
_বাবা কি বলছো এসব। আমার কিচ্ছু হবেনা। খামোখা টেনশন নিয়ো না তো। আচ্ছা বাবা তুমি ঠিক আছো তো । তোমার চেহারায় ভয় কেন
_ও কিছুনা। চল দেরি হয়ে যাচ্ছে
বাড়িটা সাজানো হয়েছে। এতো দ্রুত কিভাবে করলো এসব। বাবা তো পছন্দ করে না এসব । কি হচ্ছে এখানে। কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকে মেঝেতে বসিয়ে সামনে ওড়না দিয়ে দিল। ওপাশে বরকে বসানো । হিজাবের ভিতর দিয়ে আবছা আবছা দেখছি। কাজি সাহেব বিয়ে পড়ালেন। তিন কবুল বলার মধ্যে দিয়ে আমি জড়িয়ে গেলাম অন্য একটি জীবনের সাথে। রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করার সময় জানলাম ওনার নাম আকাশ । বুকটা ধপধপ করছে। বাবা আমাদের বিদায় দেওয়ার সময় কাছে আসলেন না। মুখে ভয়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে। দাদি কেঁদে কেঁদে বিদায় দিলেন। হঠাৎ মাথায় কারোর হাতের স্পর্শে কেঁপে উঠলাম। জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পরলাম কারোর বুকে।
আকাশ রোজাকে কোলে তুলে নিল । ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
_আজ আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ। তোমাকে পেয়েছি আমি আমার করে । আল্লাহ তোমাকে আবার আমার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তুমি আমার জম্মান্তরের মায়াময়ী বৌ। আমি পাগলের মত ভালবাসি তোমায়।
রোজার কপালে চুমু দিয়ে দিল আকাশ। আকাশ কে শুধু রশিদ (রোজার বাবা) দেখতে পারছেন। আকাশ রাগী চোখে রশিদের দিকে তাকিয়ে বলল,
_তোর মেয়ের জন্য আজ তুই বেঁচে গেলি। কিন্তু তোর কর্মের ফল ভোগ করবি একদিন। তোর জন্য আমাকে ৫০ বছর কাঁচের বোতলে আটকে থাকতে হয়েছে। মনে রাখিস।
#নেশাক্ত_জ্বীনের_ভালবাসা -২
সংগৃহীত।
পর্ব:১